Notification texts go here Contact Us Buy Now!

পাপ করে ফেললে কি করবো?

আপনি হয়তো বলতে পারেন, যখন আমার দ্বারা পাপ হয়ে যাবে তখন কিভাবে দ্রুত তাওবা করতে পারি? এমন কোন কাজ রয়েছে কি যা পাপ করার সাথে সাথেই করতে পারি?

উত্তর: পাপ থেকে বিরত হয়েই দুটি কাজ করতে হবে:

এক: অন্তঃকরণের কাজ হলো অনুতপ্ত হওয়া এবং এই বলে দৃঢ় সংকল্প নেয়া যে, এ ধরণের কাজ আর করবো না। এটি হবে মূলত আল্লাহর ভয়ের ফলে।

দুই: অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কাজ বিভিন্ন প্রকারের নেকীর কাজ করার মাধ্যমে। এর মধ্যে অন্যতম হলো তাওবার নামায। এর দলীল হলো: হযরত আবু বকর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোন মানুষ পাপ করার পর যদি পবিত্রতা অর্জন করে, অতঃপর নামায পড়ে এরপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন। (আসহাবুস সুনান, সহীহ আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ১/২৮৪) অতঃপর তিনি এ আয়াত পাঠ করেন:

‘‘যারা অশ্লীল কাজ করার পর অথবা নিজেদের প্রতি জুলুম করার পর আল্লাহকে স্মরণ করে এরপর নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, আর আল্লাহ ব্যতীত গুনাহ সমূহ ক্ষমা করতে কেউ সক্ষম নয় এবং তারা নিজেদের কৃতকর্মের উপর অটল থাকে না এবং তারা (গুনাহের বা পাপের উপর অটল থাকার ভীষণ পরিণাম) জানে।’’ (সূরা আলে-ইমরান: ১৩৫)

অন্যান্য সহীহ বর্ণনায় এসেছে এই দু’রাকাতের গুণাবলীর কথা যা গুনাহ মাফের কারণ হবে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ:

(১) যে কেউ সুন্দরভাবে অযু করে তার সগীরা গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় (কেননা অযু করলে ধৌত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সগীরা পাপ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে পড়ে)

আর উত্তমভাবে অযু হলো: প্রথমে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা এবং শেষে এ দু’আ করা:

"أَشْهَدُ اَنْ لاَ اِلَهَ اِلاَّ اللهُ وَحْدهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَ أَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ. اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ، سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَاَتُوْبُ إِلَيْكَ"

‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই। তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের এবং পবিত্রতা অর্জনকারী ব্যাক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করুন। হে আল্লাহ! আপনার স্ত্ততির সাথেই আমি আপনার প্রশংসা করছি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই। আমি আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার নিকট তাওবা করছি।’’

(২) এতে মনে মনে কোন কথা বলা যাবে না।

(৩) এতে একাগ্রতা ও বিনয়ীভাব আনতে হবে।

(৪) এরপর ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

পূর্বোক্ত কাজের ফলাফল:

(ক) পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

(খ) জান্নাত অবধারিত হয়ে যাবে। (সহীহ আততারগীব ১/৯৪-৯৫)

(গ) বেশী বেশী নেকী ও সৎকর্ম করা।

আপনি সহীহ হাদীসে উল্লিখিত এই উদাহরণটি ভালভাবে চিন্তা করে দেখুন! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

(إِنَّ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ السَّيِّئَاتِ ثُمَّ يَعْمَلُ الْحَسَنَاتِ كَمَثَلِ رَجُلٍ كَانَتْ عَلَيْهِ دِرْعٌ ضَيِّقَةٌ قَدْ خَنَقَتْهُ ثُمَّ عَمِلَ حَسَنَةً فَانْفَكَّتْ حَلَقَةٌ ثُمَّ عَمِلَ حَسَنَةً أُخْرَىْ فَانْفَكَّتْ حَلَقَةً أُخْرَى حَتَّى يَخْرُجَ إِلَى الأَرْضِ) (مسند الإمام أحمد، والطبراني في الكبير)

‘‘ঐ ব্যক্তির উদাহরণ হলো, যে খারাপ কাজ করে সে সেই ব্যক্তির মত যার গায়ে খুব আটোসাটো লৌহবর্ম চাপান আছে যা তাকে চেপে ধরে রেখেছে, অতঃপর সে একটি নেক কাজ করলে একটি আংটা খুলে গেল, অতঃপর আরেকটি নেক কাজ করলে আরেকটি আংটা খুলে গেল, এভাবে সব খুলে মাটিতে পড়ে যায়’’। (মুসনাদে আহমাদ, তরারানী)

সুতরাং নেকী পাপীকে গুনাহের বন্দীখানা থেকে মুক্ত করে তাকে আনুগত্যের প্রশস্ত ময়দানে বের করে নিয়ে আসে। প্রিয় ভাই! নিম্নোক্ত ঘটনা আপনাকে বিষয়টি আরো পরিষ্কার করে দিবে।

হযরত ইবনে মাসউদ রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলে, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এক মহিলাকে বাগানের ভিতর একাকী পেয়ে সব কিছুই করেছি কিন্তু সহবাস করিনি। চুমা খেয়েছি, তাকে চেপে ধরেছি, এছাড়া আর কিছু করিনি। এখন আপনি আমার ব্যাপারে যা ইচ্ছা করতে পারেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে কিছু বললেন না, সুতরাং লোকটি চলে গেল। অতঃপর হযরত উমর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, আল্লাহ  লোকটির অবস্থা গোপন রেখেছিলেন যদি সে নিজের কথা গোপন রাখত। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চোখ তুলে তাকালেন এবং বললেন, ওকে আমার কাছে নিয়ে এসো। যখন তাকে ডেকে নিয়ে আসা হলো তখন তাকে  এ আয়াত পাঠ করে শুনালেন: ‘‘আপনি নামাজ প্রতিষ্ঠা করুন দিনের দুই প্রান্তে এবং রাতের একটি অংশে। নিশ্চয়ই নেকী গুনাহকে মিটিয়ে দেয়। এটি হলো উপদেশ, উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য।’’ (সূরা হুদ: ১১৪)

মুয়ায রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, অপর বর্ণনায় এসেছে হযরত উমার থেকে তিনি বললেন: হে আল্লাহর রাসুল! এটি কি তার একার জন্য না সকল মানুষের জন্য? তখন তিনি বললেন, বরং সমস্ত মানুষের জন্য। (মুসলিম)

বিস্তারিত দেখুন http://www.hadithbd.com

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.