শিক্ষণীয় গল্প-১-----------------------------------------------
একবার একটা ইঁদুর ভুল করে হীরের টুকরো গিলে ফেলে। হীরের যে মালিক তার রাতের ঘুম উড়ে যায়। ইঁদুর বধের জন্যে সে এক ইঁদুর শিকারীর খোঁজ করে তাকে সেই ইঁদুর মেরে হীরে উদ্ধার করার ঠিকে দেয়।
শিকারি যখন ইঁদুর মারতে ইঁদুরদের বাসস্থানে পৌঁছোয় সে দেখে হাজারের ওপর ইঁদুর একে অন্যের সংগে গুঁতোগুঁতি করে বসে শুয়ে আছে আর একটা ইঁদুর সবার থেকে আলাদা এক জায়গায় চিৎপটাং হয়ে শুয়ে।শিকারি তাক করে ওই ইঁদুরটাকেই ধরে আর তার পেট চিরে হীরে বার করে মালিকের হাতে সেটা তুলে, নিজের হিসেব বুঝে যখন সেখান থেকে যেতে উদ্যত হয়, মালিক যিনি যারপরনাই আশ্চর্য হয়েছিলেন শিকারির কেরামতি দেখে, তাকে জিজ্ঞেস করেন,-হাজারো ইঁদুরের মধ্যে কি ভাবে তুমি বুঝলে ভাই যে ওই ইঁদুরটাই হীরে গিলেছে..??
শিকারি জবাবে বলে,-খুব সহজ স্যার। মূর্খ যখন হঠাৎ বিত্তবান হয়ে যায়, সে নিজের লোকেদের সংসর্গ ও তাদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দেয়।
'শিক্ষাঃ মূর্খ যখন হঠাৎ বিত্তবান হয়ে যায়, সে নিজের লোকেদের সংসর্গ ও তাদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দেয়।
শিক্ষনীয় গল্প-২------------------------------------------
একফোঁটা মধু মাটিতে পরে আছে!পাশ দিয়ে ছোট্ট একটি পিঁপড়া যাচ্ছিলো।মধুর ঘ্রান নাকে ঢুকতেই থমকেদাঁড়ালো।ভাবলো একটু মধু খেয়ে নেই,তারপর নাহয় সামনে যাবো।এক চুমুক খেলো,,,,,,,, বাহ্,,,খুব মজাতো,আরেকটু খেয়ে নেই!আরেক চুমুক খেলো।তারপর সামনে চলতে লাগলো!হাটতে হাটতে ঠোঁটে লেগে থাকা মধুচেটে খাচ্ছিলো।
ভাবলো,এতো মজার মধু আরেকটু খেয়ে নিলে কিহয়???
আবার পিছনে ফিরলো,পূর্বে নিচেথেকে খেয়ে ছিলো।ভাবলো,নিচের মধুএতো মজা উপরের টা হয়তো আরো মজাহবে।
তাই,আস্তে আস্তে বেয়ে বেয়েমধুর ফোঁটার উপরে উঠে গেলো।বসে বসে আরামছে মধু খাচ্ছে।খেতেখেতে এক পর্যায়ে পেট ফুলে গেলো।ঐ দিকে পা দুটো নিজের অজান্তেআস্তে আস্তে মধুর ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে।তখনই হঠাৎ পায়ের দিকে নজর পড়লোতার।কিন্তু ততহ্মনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।মধু থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতেআপ্রান চেষ্টা করতে লাগলো।
কিন্তু নাহ্,,,,,মধুতে তার সমস্ত শরীরমাখামাখি অবস্থা।অনেক চেষ্টাকরেও নিজেকে আর উদ্ধার করতে সহ্মমহলো না।।।।নাকে মুখে মধু ঢুকে দম বন্ধ হয়ে যেতেলাগলো।
অবশেষে,পিঁপড়াটি মধুর ভিতর আটকেপড়েই মৃত্যু বরন করল,,,,,,!!
শিক্ষাঃ এই বিশাল দুনিয়াটা একফোঁটা মধুর মত।যে এই মধুর পাশে বসে হালাল ওঅল্পতে তুষ্ট থাকবে সেই বেঁচে গেলো।আর যে এই স্বাদের মধ্যে ডুব দিতেগিয়ে হালাল-হারাম,বাচ-বিচার নাকরে শুধু খেয়েই গেলো,আরেকটু আরেকটুকরতে করতে একদিন সে এর মায়াজালেআটকে পড়েই মারা যাবে।তখন আর কেউ তাকে উদ্ধার করতেপারবেনা।ধ্বংস অনির্বায।তার দুনিয়াও আখেরাতের দু'টোই শেষ।
শিক্ষনীয় গল্পঃ ৩---------------------------------------------------------
একবার এক ইঁদুর লক্ষ্য করল যে বাড়িতে ইঁদুর মারার ফাঁদ পাতা রয়েছে। সে খুবই ভয় পেল। ফাঁদটি অকেজো করার জন্য সে ওই বাড়িতে থাকা মুরগির সাহায্য চাইল। মুরগি ঘটনা শুনে জবাব দিল- “ফাঁদটি আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। অতএব আমি এখানে কোন সাহায্য করতে পারব না”।.মুরগির কাছ থেকে এই উত্তর শুনে ইঁদুর খুব দুঃখিত হলো
এবং ছাগলের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইল। ছাগল ফাঁদের কথা শুনে বললো- “ওই ফাঁদ বড়দের জন্য নয়। আমি এখানে তোমাকে কোন সাহায্য করতে পারব না”।.ইঁদুর ছাগলের কাছ থেকে একই উত্তর শুনে দুঃখিত হয়ে গরুর কাছে এলো। সব কথা শুনে গরু বললো- “ইদুরের ফাঁদ আমার মতো বড় প্রাণীর কোন ক্ষতিই করতে পারবে না। যা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না তা নিয়ে আমি কেন বৃথা চিন্তা করব?”। ইঁদুর শেষ পর্যন্ত নিরাশ হয়ে তার ঘরে ফিরে এলো।.
রাতের বেলা বাড়ির কর্ত্রী অন্ধকারের ভিতর বুঝতে পারলেন যে ফাঁদে কিছু একটা ধরা পড়েছে। অন্ধকারে ফাঁদের কাছে হাত দিতেই উনি হাতে কামড় খেলেন এবং দেখলেন ফাঁদে ইঁদুরের বদলে সাপ ধরা পড়েছে। তার চিৎকারে কর্তার ঘুম ভাঙল।
তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডাকা হলো। চিকিৎসা শুরু হয়ে গেল। কিন্তু অবস্থা মোটেই ভালো না। পথ্য হিসেবে ডাক্তার মুরগির সুপ খাওয়াতে বললেন। সুপের জন্য কর্তা মুরগিকে জবাই করে দিলেন। অবস্থা আস্তে আস্তে আরও খারাপ হতে লাগলো। দূর দূরান্ত থেকে আরও অনেক আত্মীয় স্বজন আসতে লাগলো। বাধ্য হয়ে কর্তা ছাগলকে জবাই করলেন তাদের আপ্যায়ন করার জন্য।
আরও ভালো চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার হতে লাগলো। অবশেষে বাড়ির কর্তা তাদের গরুটিকে কসাইখানায় বিক্রি করে দিল। একসময় বাড়ির কর্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠল। আর এই সমস্ত কিছু ইঁদুরটি তার ছোট্ট ঘর থেকে পর্যবেক্ষণ করল।.
শিক্ষা:কেবল নিজের চিন্তায় যে মগ্ন, নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না তার বিপদকালেও কেউ এগিয়ে আসবে না। প্রতিবেশির বিপদ মানেই নিজের বিপদ, দেশ ও জাতির সঙ্কট মানেই নিজের সঙ্কট, মুসলিম হিসাবে মুসলমান জাতির উপর বিপদ মানে সেটা আমার উপরেও বিপদ- এই চিন্তা থেকে যে নিজেকে মুক্ত করে কেবল স্বার্থচিন্তায়, আত্মচিন্তায় নিমগ্ন তার বিপদ অনিবার্য, ইহজগৎ ও পরজগৎ উভয় জায়গাতেই সে বিপদগ্রস্ত হবে। তার হাজার এবাদতও তাকে জাহান্নাম থেকে, নরক থেকে, হেল থেকে মুক্ত করতে পারবে না।
শিক্ষণীয় গল্পঃ ৪-----------------------------------------------
সমুদ্রের মাঝখানে এক জাহাজ প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যে পরে লন্ডভন্ড হয়ে গেল। সেই জাহাজের বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী ভাসতে ভাসতে এক নির্জন দ্বীপে এসে পৌঁছালো। জ্ঞান ফেরার পর প্রথমেই সে আল্লাহর কাছে প্রাণ খুলে শুকরিয়া আদায় করলো তার জীবন বাঁচানোর জন্যে।
প্রতিদিন সে দ্বীপের তীরে এসে বসে থাকতো যদি কোনো জাহাজ সেদিকে আসে সেই আশায়। কিন্তু প্রতিদিনই তাকে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হতো।এরই মধ্যে সে সমুদ্রতীরে তার জন্য একটা ছোট ঘর তৈরি করে ফেললো।সমুদ্রে মাছ ধরে এবং বন থেকে ফলমূল সংগ্রহ ও শিকার করে সে বেঁচে থাকলো।এরই মধ্যে সে একদিন খাবারের খোঁজে বনের মধ্যে গেল।
বন থেকে সে যখন ফিরে এলো তখন দেখলো যে তার রান্না করার চুলা থেকে আগুন লেগে পুরো ঘরটিই ছাই হয়ে গিয়েছে এবং তার কালো ধোঁয়ায় আকাশ ভরে গিয়েছে।লোকটি চিৎকার করে উঠলো, 'হায় আল্লাহ! তুমি আমার ভাগ্যে এটাও রেখেছিলে!'
পরদিন সকালে এক জাহাজের আওয়াজে তার ঘুম ভাঙলো। জাহাজটি সেই দ্বীপের দিকে তাকে উদ্ধার করার জন্যই আসছিলো।সে অবাক হয়ে বললো,, 'তোমরা কিভাবে জানলে যে আমি এখানে আটকা পরে আছি!' জাহাজের ক্যাপ্টেন জানালো', তোমার জ্বালানো ধোঁয়ার সংকেত দেখে।
'শিক্ষাঃ আল্লাহ্ যা করেন তা বান্দার মঙ্গলের জন্যই করেন! আপনি প্রশ্ন করতে পারেন যখন বিপদ আসে তখন বান্দার কিভাবে মঙ্গল হয়???তখনও কোন না কোন ভাবে আপনার মঙ্গল হয় কিন্তু আমি-আপনি বুঝতে পারি না।অর্থাৎ সবসময় বিধাতার উপর ভরসা রাখুন, নিশ্চয় তিনি যা করেন তা বান্দাদের ভালোর জন্যই করেন!
শিক্ষণীয় গল্পঃ ৫-----------------------------------------------
কালো আর সাদা নুড়িপাঠক, আপনি নিশ্চয়ই উইলিয়াম সেক্সপীয়ারের লিখা “ The Merchant of Venice ” পড়েছেন।ঐ ভেনিস শহরে এই ঘটনাটি ঘটেছিল।এক ব্যবসায়ীর ব্যবসা ভাল যাচ্ছেনা। তিনি প্রচুর ধার নিয়েছিলেন জঘন্য কুৎসিত ৭০ বছরের বুড়ো এক ইহুদীর কাছে। বুড়ো প্রতিদিন তাগাদা দেয়, ভয় দেখায়, যে কোর্টে কেস্ করবে।একদিন ঐ কুৎসিত বুড়ো প্রস্তাব দিল, শোন তোমার তো ১৮ বছরের একটি সুন্দরী মেয়ে আছে। আমার সঙ্গে যদি বিয়ে দাও, সব ঋণ মাফ করে দেব। মেয়েটি শুনে বলল, বাবা, আমি আত্মহত্যা করব। ব্যবসায়ীর রাতে ঘুম হয়না। আবারও অনুরোধ করল ইহুদীকে যেন উনি কোর্টে কেস্ না করেন।ইহুদী বলল ,-আমি খুব দয়ালু মানুষ। আমি রাস্তা থেকে দুটি নুড়ি এই ব্যাগে ঢোকাব। একটি কালো আরেকটি সাদা। তোমার মেয়ের কাজ হবে ব্যাগ থেকে একটি নুড়ি বের করা ।যদি তোমার মেয়ে কালো নুড়ি বের করে তবে আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য।আর যদি সাদা নুড়ি তোলে তাহলে আমাকে বিয়ে করতে হবেনা এবং তুমিও ঋণমুক্ত হবে।আবারো বলছি, কালো নুড়ি তুললে আমাকে বিয়ে করতে হবে । বুঝলে ?ব্যবসায়ী অনেক ভাবলেন। আর কোন পথ নেই। রাজী হলেন। মেয়েটি, ব্যবসায়ী ও ইহুদী এবার এক রাস্তায় গেলেন যেখানে অনেক নুড়ি ছড়িয়ে আছে। ইহুদী হাঁটু গেড়ে দুটি নুড়ি তুললেন। ব্যাগের মধ্যে ঢোকালেন । মেয়েটির বয়স ১৮ বছর হলেও খুব বুদ্ধিমতী। আড়চোখে দেখল ইহুদী তার জন্মগত ধূর্ততায় দুটো কালো নুড়ি ঢোকালেন।এবার ইহুদী মেয়েটিকে বলল,-ব্যাগ থেকে নুড়ি তোল।মেয়েটি একটি নুড়ি বের করলো ব্যাগ থেকে । নুড়িটি না দেখে ইচ্ছে করেই ফেলে দিল নিচে । নুড়িটি গড়িয়ে গিয়ে অন্যসব পাথরের সঙ্গে মিশে গেলে।একটু কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,-ও মাই গড্ ! আমি একদম চট্পটে নই। কিভাবে যে আমার হাত থেকে নুড়িটি পড়ে গেল ! তবে কোন চিন্তা নেই আপনার ব্যাগে তো আরেকটি নুড়ি আছে। ওটা দেখলেই তো বোঝা যাবে আমি কোন নুড়িটি নিয়েছিলাম।পাঠক, জীবনে যদি সমস্যা আসে সবসময় সোজাভাবে চিন্তা না করে একটু বেঁকিয়ে চিন্তা করুন।সমাধান পাবেনই।
শিক্ষণীয় গল্পঃ ৬-----------------------------------------------
একদা হযরত জুন্নুন মিসরী (রহ.) কাপড় ধোয়ার নিমিত্তে নীল নদের তীরে গমন করেন। সহসা দেখতে পেলেন যে, বড় একটি বিচ্ছু তীর পানে অগ্রসর হচ্ছে। বিচ্চুটি নদীর কিনারায় পৌঁছা মাত্র পানি থেকে একটি কচ্ছপ ভেসে উঠল। বিচ্চু কচ্ছপটিকে দেখা মাত্র দ্রুতগতিতে গিয়ে তাঁর পিঠে চড়ে বসল। আর কচ্ছপটি তাকে নিয়ে অপর প্রান্তে ছুটতে লাগল।
জুন্নুন মিসরী (রহ.) বলেন, তাদের কান্ড দেখার জন্য আমি অবাক নয়নে পানিতে নেমে পড়লাম। কচ্ছপটি তীরে উঠামাত্র বিচ্চু তাঁর পিঠ থেকে নেমে পড়ল। আমিও নদী থেকে উঠে তার পিছু ধরলাম। কিছুক্ষণ তাকে অনুসরণ করার পর দেখতে পেলাম অল্প বয়সের এক যুবক ঘন বৃক্ষ ছায়ায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম, বিচ্ছুটি নদীর ওপার হতে মনে হয় যুবক ছেলেটিকে দংশন করত এসেছে। প্রথিমধ্যে দেখতে পেলাম, একটি বিষধর সাপ ধীরে ধীরে যুবকের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সাপটি যুবকের নিকট পৌঁছার আগেই বিচ্চুটি তড়িৎ গতিতে সাপের মাথার উপর চড়াও হয়ে দংশন করল। তরপর আর দেরী হল না, কিছুক্ষণ পরেই সাপটি সেইখান থেকে চলে গেল । আর বিচ্ছু পূর্বের পথ ধরে নদীর তীরে ছুটল। সেখানে কচ্ছপটি ছিল তাঁর প্রতিক্ষায়। অতঃপর তাঁর পিঠে সওয়ার হয়ে পূর্বের ন্যায় সে তাঁর গন্তব্যে চলে গল।
জুন্নুন মিসরী (রহ.) বলেন, এ অদ্ভুদ ও বিস্ময়কর দৃশ্য উবলোকন করে আমি কবিতা আবৃতি কুরতে লাগলাম। হে সুখ নিদ্রায় নিমগ্ন ব্যক্তি! মহীয়ান প্রভু তোমায় ঘুটঘুটে অন্ধকারের যাবতীয় বিপদাপদ ও ক্ষয় ক্ষতি হতে রক্ষা করেছেন। কিভাবে তোমার চোখ সুখনিদ্রায় বিভোর হয়ে আছে সে রাজাধিরাজকে ভুলে। সর্বক্ষণ যার সীমাহীন নেয়ামতের বারিধারা বর্ষণ হচ্ছে তোমার উপর। কেমন করে ভুলে থাকো হে যুবক ওঠো সুকনিদ্রা ত্যাগ করো দেখ মহান আল্লাহর কুদরতী । আমার কবিতা পাঠের শব্দ শুনে যুবকের ঘুম ভেংঙ্গে গেল। আমি তাকে সচক্ষে দেখ ঘটনাটির পূর্ণ বিবরণ শুনালাম।
ঘটনাটি তার অন্তর জগতে দারুণ ভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করল। দুই খানা হাত বিদ্যুৎ চালিতের উঠে আসলো উপরে,দু চোখ ভরে নেমে আসলো অযশ্র ধারায় পাপাশিক্ত বারিধারা অনুতপ্ত হৃদয় খানা একান্তভাবে স্বপে দিলো মহান আল্লাহর আলীশান দরবারে। ফলে সে গুনাহের অভিশপ্ত জীবন পরিহার করে জীবনের অবশিষ্ট অংশটুকু আল্লাহর পথেই কাটিয়ে দিল।- (তাফসীরে কাবীর)
শিক্ষণীয় গল্পঃ ৭----------------------------------------------
এক রাজার প্রেমের গল্প ...এক দেশে এক রাজা ছিলেন। রাজার দরবারে অনেক দাস, দাসি ছিল। তিনি সবার সাথে ভালো ব্যাবহার করতেন কিন্তু একজন দাসিকে তিনি খুব ভালোবাসতেন। এ নিয়ে রাজমহলে অনেকেই অনেক রকম কটু মন্তব্য করতেন।একদিন রাজার এক বন্ধু রাজাকে বললেন, 'বন্ধু, তুমি কি জানো তোমাকে নিয়ে প্রজারা অনেক বাজে মন্তব্য করে?'রাজা বললেন, 'কেন?'বন্ধু বললেন, 'তুমি রাজ্যে এতো সুন্দরী মেয়ে থাকতে একটি সামান্য দাসির সাথে কেন সম্পর্কে জড়ালে?'তখন রাজা বললেন, 'একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করো, এই আয়োজনে রাজ্যের সব সুন্দরী মেয়েরা থাকবে। এখান থেকে যাকে আমার পছন্দ হবে থাকেই আমি বিয়ে করবো।'কথা মতো দিন তারিখ ঠিক হলো। রাজ্যের সব সুন্দরী মেয়েরা রাজার দরবারে হাজির। এই প্রত্যাশায় যে, যদি রাজার পছন্দ হয়ে যায় তবে তার সাথে বিয়ে হবে। সময় মতো রাজা ও সেই দাসি এবং সবাই হাজির হলেন। রাজা তার সব ধন-সম্পদ, হীরা, মনি মুক্তা ইত্যাদি সবার সামনে রাখলেন আর বললেন, 'আমি পছন্দ করবো পরে, আগে যার যা সম্পদ দরকার এখান থেকে নিয়ে নাও, তারপর আমি পছন্দ করবো কাকে আমি বিয়ে করবো।'রাজার দরবারে যারা এসেছিলেন সবাই সবার ইচ্ছে মতো মনিমুক্তা, হীরা, টাকা-পয়সা নিতে লাগলেন। কিন্তু সেই দাসিটি কিছু না নিয়ে রাজার পোষাক ধরে রাখলেন। সবার সব কিছু যখন নেয়া শেষ হলো দেখা গেল সবাই কিছু না কিছু নিয়েছেন, কিন্তু সেই দাসি কিছুই নেন নাই। তিনি রাজার পাশে গিয়ে রাজার পোষাক ধরে আছেন।সবাই অবাক হয়ে জিজ্ঞাস করলেন, 'হে দাসি! তুমি তো গরিব তোমার অনেক কিছুই দরকার। কিন্তু তুমি কিছু না নিয়ে রাজার পোষাক ধরে রেখেছো কেন?'উত্তরে দাসি বলল, 'আপনারা তো সম্পদ নিয়েছেন, কিন্তু আমি এই সম্পদের মালিককে নিয়েছি। আমি এই সম্পদের মালিকের হয়ে যেতে চাই, যদি আমি এই সম্পদের মালিকের হয়ে যেতে পারি তবে তো সব সম্পদই আমার। তাই আমি সম্পদের মালিকের পোষাক ধরে রেখেছি।'তখন রাজা বললেন, 'এবার হয়তো তোমরা সবাই বুঝতে পেরেছো, আমি রাজ্যের এতো সুন্দরী রেখে কেন এই দাসিকে ভালবাসি?'সবাই বললেন, 'হ্যাঁ, বুঝতে পেরেছি।'#শিক্ষা -এভাবে আমরাও দুনিয়ার সম্পদ নিয়ে ব্যাস্ত থাকি, কিন্তু আমরা একবারও চিন্তা করিনা যে, এই সম্পদের মালিক যিনি; আমরা যদি তার হয়ে যাই তবে এই দুনিয়ার সবকিছুই তো আমাদের।তাই আসুন ..দুনিয়ার সম্পদ নয়, সকল সম্পদের মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে খোঁজ করি। যদি আমরা তাঁকেই পেয়ে যাই তবে সেটাই হবে আমাদের উভয় জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া।