একবার হলেও পড়া উচিত বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হলেন ওয়ারেন বাফেট।ওয়ারেন বাফেট এর কিছু অসাধারণ কিছু ব্যাপার আছে যা মানুষ এ উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যেতে পারে। তার বিখ্যাত কথা ও জীবন ইতিহাস নিচে তুলে ধরা হল…
১. তিনি তার প্রথম শেয়ার কিনেন তার বয়স যখন ১১ বছর, তিনি আজ মনে করেন এটা অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল।
২. মাত্র ১৪ বছর বয়সে নিউজপেপার বিক্রির টাকা সেভ করে একটি ছোট ফার্ম ক্রয় করে।
৩. উনি বর্তমানে 'ওহামা' শহরের ছোট একটা তিন বেড্রুমের বাড়িতে, যা তিনি ৫০বছর আগে বিয়ের সময় কিনেছিলেন, তিনি বলেন যে ' আমি যা কিছু চাই তার সব ই এই বাসায় বিদ্যমান',
এই বাসায় কোন ওয়াল/ফ্রেঞ্চ নাই।
৪. তিনি তার নিজের গাড়ি সর্বক্ষেত্রে নিজেই ড্রাইভ করেন, উনার কোন ড্রাইভার বা গার্ড নাই।
৫. তিনি প্রাইভেট বিমানে চড়েন না যদিও তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় জেট বিমান প্রস্তুত কোম্পানীর মালিক।
৬. তার কোম্পানি 'বারকশিয়ার হাতাওয়ে' ৬৩ কোম্পানীর সমষ্টি, তিনি প্রতি বছর তার কোম্পানীর CEO দের বরাবর একটি চিঠি লেখেন এবং তাদেরকে লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেন, তিনি প্রতিনিয়ত মিটিং বা কল করেন না। শুধু দুটি নিয়ম বলে দেনঃ ১. তোমার শেয়ার হোল্ডারদের অর্থ লোকসান করোনা ২. এক নং নিয়ম ভুলোনা।
৭. তিনি সেভাবে কখনো হাই সোসাইটির সাথে মিশেন না, তিনি তার সময় কাটান পপকর্ণ খেয়ে আর টেলিভিশন দেখে।
৮. বিশ্বের বড় ধনী পাঁচ বছর আগে উনার সাথে দেখা করেন যদিও তিনি বাফেট নিয়ে তেমন কিছুই জানতেন না, তাই তিনি ৩০ মিনিট সময় নেন যা পরবর্তীতে ১০ ঘন্টায় দীর্ঘায়িত হয়েছিল।
৯. ওয়ারেন বাফেট কোন সেল ফোন ব্যবহার করেন না আর তার টেবিলে কোন কম্পিউটারও থাকে না।
১০. তিনি যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন ক্রেডিট কার্ড থেকে দূরে থাকো আর নিজেকে কোথাও নিয়োগ কর।
তার অসাধারন কিছু উক্তিঃ
* অর্থ সেরা মানুষ তৈরী করেনা বরং সেরা মানুষরাই অর্থ তৈরী করে।
* জীবনকে ততটাই সাধারন ভাবে কাটাও যতটা সাধারন তুমি নিজে।
* অপরের কথায় চলোনা, তাদের কথা শুনো কিন্তু সেটাই করো যা তোমার কাছে উপভোগ্য।
* ব্রান্ডের নামের দিকে ছুটোনা, সেটাই পরিধান করো যা নিজের কাছে আরামদায়ক।
* তোমার অর্থ অপ্রয়োজনীয় জায়গায় খরচ করোনা, সেখানেই খরচ করো যেখানে তা সত্যি দরকার।
* সবকিছুর পরেও এটা তোমার জীবন তাহলে কেন অপরকে কেন সুযোগ দিবে তোমার জীবনেই নিয়ম তৈরিতে।
* কখনো একটি উৎসের উপর নির্ভর করবেন না। আয়ের অনেকগুল উৎস রাখুন। বিনিয়োগের মাধ্যমে আরেকটি উৎস তৈরি করুণ ।
* ব্যয় করার পর যা রয়ে যায় তা না বাচিয়ে বরং টাকা বাচানোর পর অবশিষ্ট অংশ ব্যয় করুন।
* খরচের পর যা অবশিষ্ট থাকে তা সঞ্চয় না করে বরং সঞ্চয়ের পর যা অবশিষ্ট থাকে তা খরচ করুন।
* আপনার উভয় পা ডুবিয়ে দিয়ে কখনও নদীর গভীরতা মাপবেন না । অর্থাৎ কখনো দুই পায়ে নদীর মধ্যে নামবেন না একটি পা ডাঙায় রেখে আরেকটি দিয়ে গভীরতা মাপুন (যখন ঝুকি নেবেন তার আগে …থেকেই বিকল্প প্রস্তুত রাখুন)।
* কখনো আপনার সব ডিম (সব বিনিয়োগ) এক ঝুড়িতে রাখবেন না (এক খাতে করবেন না) বরং অল্প অল্প করে অনেক খাতে বিনিয়োগ করুন।
* সততা খুবই দামী একটা উপহার। তা কখনই সস্তা লোকদের নিকট থেকে আশা করবেন না।
* অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা বন্ধ না করলে এক সময় দেখবেন প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য আপনার কাছে পর্যাপ্ত টাকা নেই।
* আপনার যা প্রয়োজন নেই তা যদি আপনি ক্রয় করেন ,তবে শিঘ্রই আপনার যা প্রয়োজন তা আপনাকে বিক্রি করতে হবে। আপনি সারা জীবনে খুবই অল্প সংখ্যক ঠিক কাজ করতে পারবেন।
*কাজেই বেশি পরিমাণে ভুল কাজ করবেন না।
শর্ত নম্বর ১ : কখনই আর্থিক লোকশান করবেন না।
শর্ত নম্বর ২ : কখনই শর্ত নম্বর ১ ভুলবেন না। নিজেকে গর্তের মধ্যে খুঁজে পেলে গর্ত খোঁড়া বন্ধ করাই গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
* আপনি কী করছেন তা না জানা থেকেই ঝুঁকির আগমন ঘটে। আজ কেউ ছায়ায় বসে আছে কারণ অনেক আগে কেউ গাছটি লাগিয়েছিলেন। সাত ফুট উঁচু কাঠির উপর দিয়ে আমি লাফ না মেরে এক ফুট উচ্চতার কাঠি পেরুতে চাই- যা আমি খুব সহজেই হেঁটে পার হতে পারি।
এক নজরে ওয়ারেন বাফেট
* জন্ম : ৩০ আগস্ট ১৯৩০ ওমাহা, নেব্রাস্কা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র* জাতীয়তা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
* শিক্ষা : অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর
* পেশা : চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী , বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে
* কার্যকাল : ১৯৫১-বর্তমান
* বেতন : ১০০০০০ মার্কিন ডলার
* মোট সম্পত্তি : $ ৬১ বিলিয়ন