Notification texts go here Contact Us Buy Now!

হিংসা, তীব্র নিন্দা ও অপ্রীতিকর সমালোচনায় যা করনীয়

হিংসা, তীব্র নিন্দা ও অপ্রীতিকর সমালোচনা

তীব্র নিন্দা ও অপ্রীতিকর সমালোচনা যেভাবে নিবেন

যারা অজ্ঞ ও মূর্খ তারা সকল সৃষ্টির স্রষ্টা মহান আল্লাহকেও গালি দিয়েছে, সুতরাং আমরা সাধারণ লোকজনের কাছ থেকে কী আশা করতে পারি? আমরাতো ভুল-ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত। আপনাকে সর্বদাই এমন তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার অসমাপনীয় ঝড়ের মুখে পড়তে হবে- যার তীব্র আক্রমণ অন্তহীন যুদ্ধের মতো।


যখন আপনি উন্নতি করবেন, নিজেকে প্রকাশিত করবেন, নিজেকে উদ্ভাসিত করবেন এবং অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করবেন, তখনই অগ্রাহ্য, অবজ্ঞা ও নিন্দা আপনার ভাগ্যে বরাদ্দ হবে, যে পর্যন্ত না আপনি ভূ-গর্ভস্থ সুরঙ্গ পথে বা আকাশচুম্বী মইয়ে চড়ে জনগণ থেকে পালিয়ে যাবেন, সে পর্যন্ত তারা আপনার নিন্দা ও আপনার চরিত্রে দোষ-ক্রটি খোঁজা থেকে বিরত হবে না। সে কারণেই, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি মর্ত্যবাসী (অর্থাৎ যতদিন আপনি এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকবেন), ততক্ষণ পর্যন্ত আহত হওয়ার, (অর্থাৎ মানসিক আঘাত পাওয়ার) অপমানিত হওয়ার ও নিন্দিত হওয়ার প্রত্যাশা করুন। একটি বিষয় আপনাকে গভীরভাবে দেখতে হবে, আর তাহল- মাটিতে বসে আছে এমন ব্যক্তি মাটিতে পড়ে যায় না। মানুষেরা মৃত কুকুরকে লাথি মারতে যায় না।


অতএব, ধাৰ্মিকতায়, বিদ্যা-বুদ্ধিতে, আচার-আচরণে ও ধন-সম্পদে উৎকর্ষতায় আপনি তাদেরকে ছাড়িয়ে যাওয়াতেই আপনার প্রতি তাদের ক্রোধ। যদি না আপনি আপনার সকল প্রতিভাকে বিসর্জন দিয়ে এবং নিজেকে সকল প্রশংসা যোগ্য গুণ হতে বঞ্চিত করে- নির্বোধ, অথর্ব, তুচ্ছ, নগণ্য, মূল্যহীন ও তাদের নিকট নির্বিঘ্ন, অনুপকারী, অক্ষতিকর ও গোবেচারা হয়ে যান তবে তাদের দৃষ্টিতে আপনি এমন এক সীমালঙ্ঘনকারী ও পাপী -যার ভুলের ও পাপের প্রায়শ্চিত্ত করা যায় না। তারা আপনার জন্য ঠিক এ সমাধানই আকাঙ্ক্ষা করে।


তাই তাদের অপমান ও নিন্দার মুখে ধৈর্যশীল হয়ে থাকুন। যদি আপনি তাদের কথায় মর্মাহত হন এবং তাদেরকে আপনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে সুযোগ দেন, তবে আপনার জন্য তারা কী চায় তা আপনি বুঝতে পারবেন (তাদের কথায় আপনি আহত, বিব্রত ও রাগান্বিত হলে আপনারই ক্ষতি হবে। আর তারা এটাই চায় যে, আপনি ক্রুদ্ধ, রুষ্ট ও ব্যথিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হোন। -অনুবাদক) তার বদলে (রাগান্বিত না হয়ে), তাদের প্রতি সবচেয়ে সুন্দর আচরণ প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন এবং তাদের ফন্দির (চক্রান্তের) কারণে যাতনাবোধ করবেন না। আপনার প্রতি তাদের অবজ্ঞা শুধুমাত্র আপনার মূল্য ও গুণই বৃদ্ধি করে।


আপনি অবশ্যই তাদের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না, কিন্তু তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাদের যা বলার আছে তা অগ্রাহ্য করে তাদের নিন্দা ও সমালোচনাকে আপনি কবর দিতে (স্মৃতির পাতা হতে মুছে ফেলতে বা ভুলে যেতে) পারবেন। কুরআনের ভাষায়-


قُلْ مُوتُوا بِغَيْظِكُمْ



বলুন, তোমাদের আক্রোশে তোমরাই মর। (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১১৯)


প্রকৃতপক্ষে, আপনার গুণাবলিকে বাড়িয়ে এবং আপনার প্রতিভাকে উন্নত করে আপনি তাদের ক্রোধকে বর্ধিত করতে সক্ষম হবেন। (আপনি উন্নত হলে তারা ক্রুব্ধ হবে, ফলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে; আর এভাবেই—নিজেকে উন্নত করে তাদেরকে ক্রুব্ধ পরিণামে ক্ষতিগ্রস্ত করে-আপনি তাদের প্রতিশোধ নিতে পারেন। -অনুবাদক) আপনি যদি সকলের নিকট গৃহীত হতে চান ও সকলের ভালোবাসা পেতে চান, তবে আপনি এমন জিনিস পেতে চান যা পাওয়া অসম্ভব। (সকলের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পেতে চাইলেও তা আপনি পাবেন না। -অনুবাদক)

   

 

হিংসা হিংসুককে ধ্বংস করে

أَمْ يَحْسُدُونَ النَّاسَ عَلَىٰ مَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ


“নাকি আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মানুষদেরকে যা দান করেছেন সে বিষয়ে তারা তাদেরকে হিংসা করে।” (৪-সূরা আন নিসা: আয়াত-৫৪)


হিংসা এমন এক ব্যাধি যা শুধুমাত্র মনেরই নয় দেহেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। বলা হয় যে, হিংসুক লোকের কোন বিশ্রাম (ঘুম) নেই ও সে বন্ধুর লেবাসে একজন শক্র । হিংসারোগ সম্বন্ধে ঠিকই বলা হয় যে, এটা কম পক্ষে একটা ভয়; কেননা, এটা হিংসুককেই প্রথমে হত্যা করে (অর্থাৎ হিংসা হিংসুককে তিলে তিলে ধ্বংস করে। -অনুবাদক) আমি আমাকে ও আপনাকে উভয়কেই হিংসা করতে নিষেধ করছি; কেননা অন্যদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করার পূর্বে আমাদেরকে অবশ্যই প্রথমে নিজেদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করতে হবে। অন্যের প্রতি হিংসা করে আমাদের রক্তে মাংসে গড়া দেহখানাকে দুর্দশাগ্রস্ত করছি ও আমাদের গভীর ঘুমকে নষ্ট করছি। হিংসুক ব্যক্তি (যেন) আগুন জ্বালিয়ে সে আগুনে নিজেই বাপ দেয়। হিংসা দুঃখ-বেদনা ও ভোগান্তি এনে এক সময়ের শান্তিপূর্ণ ও পূর্ণময় জীবনকে ধ্বংস সাধন করে।


হিংসুক ব্যক্তির অভিশাপ এই যে, সে ভাগ্যকে অস্বীকার করে এবং তার সষ্টাকে অবিবেচক মনে করে।


হিংসা কোন রোগের মতো? এটাতো অন্যান্য রোগের মতো নয়। হিংসুক ব্যক্তি এ রোগের কারণে পরকালে কোন পুরস্কার পাবে না। (অথচ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের রোগ ভোগ ও তাতে ধৈর্য ধরার কারণে পরকালে পুরস্কার পাবে। -অনুবাদক)


হিংসুক ব্যক্তি তার মৃত্যুর দিন পর্যন্ত বা অন্যদের সৌভাগ্য তাদের থেকে বিদায় না নেয়া পর্যন্ত প্রচণ্ড ক্রোধে জ্বলে পুড়ে শেষ হতে থাকবে। হিংসুক ব্যক্তি ছাড়া সকলের সাথেই মীমাংসা করা সম্ভব। কেননা, তার সাথে মীমাংসার জন্য যা প্রয়োজন তা হলো- আপনি আপনার থেকে আল্লাহর সব কল্যাণ ও করুণা দূর করবেন বা আপনার সকল প্রতিভা ও সদগুণ পরিত্যাগ করবেন। যদি আপনি এরূপ করেন তবে হয়তোবা সে সুখী হবে। আল্লাহর নিকট আমরা হিংসুকের ক্ষতি হতে আশ্রয় প্রার্থনা করি। হিংসুক এমন এক বিষধর কালো সাপের মতো হয়ে যায়- যে সাপ একটি নির্দোষ দেহে এর বিষ ঢেলে না দেয়া পর্যন্ত কোন বিশ্রাম পায় না।


সুতরাং হিংসা থেকে বহু দূরে থাকুন এবং হিংসুক লোক থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করুন। কেননা, সে সর্বদা আপনাকে সতর্কভাবে লক্ষ্য করছে।

إرسال تعليق

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.